“জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা বদ্ধপরিকর: তালুকদার খালেক”
মোঃ শামীম হোসেন- খুলনা –
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদর আব্দুল খালেক বলেছেন, মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা বদ্ধপরিকর। সে লক্ষ্যে আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পাশাপাশি নগর সংলগ্ন খাল ও নদীসমূহ খনন করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে প্রকল্পভুক্ত নদী ও খালসমূহের খনন কাজ সম্পন্ন হলে নগরীর জলাবদ্ধতা দূর হবে। সিটি মেয়র আজ শুক্রবার সকালে নগরীর হরিণটানা খাল খনন কার্যক্রমের লে-আউট প্রদানকালে এ কথা বলেন। সিটি মেয়র আরো বলেন, খুলনাকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও জলাবদ্ধতামুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে তিনি নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন এবং এ সকল কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বাস্তবায়নে প্রকল্পভুক্ত এলাকায় নির্মিত অবৈধ স্থাপনা নিজ উদ্যোগে অপসারণের জন্য দখলদারদের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। কেসিসি’র কাউন্সিলর জেড এ মাহমুদ ডন, প্রধান প্রকৌশলী মো: মনজুরুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান, নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মো: মাসুদ করিম, উপসহকারী প্রকৌশলী মো: নাজমুল হুদা ও অমিত কান্তি ঘোষ, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিয়াউল ট্রেডার্স-এর সত্ত্বাধিকারী জিয়াউল আহসানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, কেসিসি’র ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২ হাজার ৩’শ ৪৪ মিটার দীর্ঘ হরিণটানা খালটি খনন করা হচ্ছে।
“খুলনার দাকোপে ঠাণ্ডাজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত শিশুরা”
মোঃ শামীম হোসেন- খুলনা –
উপকূলীয় জেলা খুলনায় বাড়তে শুরু করেছে ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগের প্রোকপ। জ্বর, সর্দি, কাশিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন বিভিন্ন বয়সী রোগীরা। আর এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু। এদিকে রোগী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ১০০০ রোগী খুলনা জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসছেন। এসব রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ভর্তি থাকা রোগীদের চাপ সামাল দিতে হচ্ছে। আর তাই আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় নাগরিকদের আরও বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। খুলনা জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ঠাণ্ডাজনিত কারণে বেড়েছে বয়ষ্ক ও শিশু রোগীর সংখ্যা। গেল কয়েক দিনে জেলা হাসপাতালে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন। শয্যা সংকট থাকায় অনেক রোগী হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। গেল এক সপ্তাহে প্রায় ২৫০ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলেও জানায় তারা। শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত খুলনা জেলা হাসপাতালে ৭৬ শিশুসহ মোট ৩২৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। চিকিৎসা নিতে আসা তাহিদা বেগম বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আমার ছেলের জ্বর। ওষুধ খাওয়াইছি, কিন্তু কোনো উপকার হয়নি। যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ২ মাস ১৩ দিন বয়সী শিশু আব্রাহিম নাইমকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মা হালিমা বেগম বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে বাচ্চার জ্বর, সর্দি ও কাশি। এখানে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসকরা এক্স-রে করতে বলেছে। এক্স-রে’তে দেখা গেছে ছেলের বুকে কাশি জমে শুকিয়ে গেছে। সুস্থ্য হতে সময় লাগবে। পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি দাকোপ উপজেলার বাজুয়া গ্রামের প্রশান্ত বলেন, ‘হঠাৎ করে ঠাণ্ডায় অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলাম। তাই সোমবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখন কিছুটা ভালো আছি। এদিকে ঠাণ্ডাজনিত রোগের সঙ্গে খুলনায় বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও। বর্তমানে জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ২২জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। এছাড়া জেলায় মোট ১২৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আক্রান্তদের অনেক সতর্কভাবে সেবা দিতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। খুলনা জেলা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সেবিকা বলেন, ‘নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই শিশু রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। অনেক বেশি রোগী হওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। জেলা হাসপাতালের সহকারী পরিচালক বলেন, ‘আমাদের ২৫০ শয্যার অনুমোদন থাকলেও জনবল রয়েছে ১০০ শয্যার। এই অবস্থায় রোগীর চাপ থাকলেও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৯০০ থেকে ১ হাজার রোগীকে সেবা দিচ্ছি। আসলে স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে এই সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। হাসপাতালে বিদ্যমান জনবল বৃদ্ধি পেলে রোগীদের আরও বেশি সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।